সি নিউজ ডেস্ক : দেশে এবারও বর্ষার আগেই আগাম বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এপ্রিলের শেষ দিকে বন্যার শঙ্কা প্রকাশ করছেন আবহাওয়াবিদরা। এরই মধ্যে বিষয়টি সম্পর্কে সতর্ক করে কৃষি ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এর ভিত্তিতে কৃষি মন্ত্রণালয় ৭৫ ভাগ ধান পাকলেই কেটে ফেলতে বলছে। সহসাই এ নির্দেশনা কৃষি মন্ত্রণালয় মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের কাছে পাঠাতে যাচ্ছে।
আবহাওয়াবিদদের আশঙ্কা, বর্ষার আগেই তুমুল বর্ষণের কারণে বন্যা হতে পারে। এ মাসের শেষ দিকে উজানের ঢল এবং বৃষ্টিপাতের কারণে দেশের প্রধান প্রধান নদীর পানি বেড়ে যেতে পারে। এর মধ্যে সিলেটের সুরমা, কুশিয়ারা, শেওলা, মনু, খোয়াই, সুতাং, কংস, কালনী ও বাউলাই নদীর পানি সবচেয়ে বেশি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, চলতি মাসের শেষের দিকে অতিবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
এখনও মাঝে মধ্যেই বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জেলাগুলো প্লাবিত হতে পারে বন্যায়। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে হাওরাঞ্চল। হাওরাঞ্চলে এখনো ধান পাকেনি। তাই হাওরাঞ্চল নিয়েই সরকারের দুশ্চিন্তা বেশি।
তিনি বলেন, এ মাসের শেষ দিকে অতিবৃষ্টি ও বজ্রপাতের কারণে কৃষকরা মাঠে ধান কাটতে পারবেন না। এমনকি ধান কাটার মজুরও ঠিকভাবে পাবেন না।
এ অবস্থায় আকস্মিক বন্যা বা নদীর পানিতে ফসলি জমি প্লাবিত হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন কৃষকরা। একই সঙ্গে এর প্রভাব পড়বে কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিতে।
খাদ্য বিভাগ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগাম বন্যা বা যে কোনো ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় সারা দেশে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
গত রোববার আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে চিঠি পাওয়ার পর এনিয়ে কাজ করছেন তারা। বোরো ধান পেকেছে কিনা ওই সম্পর্কে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে একটি প্রতিবেদন নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি সচিব মোঃ নাসিরুজ্জামান বলেন, আগাম বন্যার শঙ্কা প্রকাশ করে আবহাওয়া অধিদপ্তর আমাদেরকে একটি চিঠি দিয়েছে। ওই চিঠি’র ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হলো- বোরো ধান ৭৫ ভাগ পেকে গেলেই কেটে ফেলতে হবে। এ বিষয়ে আমরা কৃষকদের এসএমএস করব।
এদিকে আগাম বন্যা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পাঠিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। সহসাই এ বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি’র বৈঠকে বসবে তারা।
এ বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তরের চিঠি পাওয়ার আগেই আমাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোতে সতর্কবার্তা ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পাঠানো হবে। এছাড়া আগাম বন্যা বা যে কোনো ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় সারাদেশে জরুরি নির্দেশনা পাঠিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
কয়েক দিন আগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মোঃ মাহফুজুর রহমান এক নির্দেশনায় পাউবোর সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বন্যাপ্রবণ এ দেশে প্রতি বছরই প্লাবিত হয় দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির পরও বন্যার মতো দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় হিমশিম খেতে হয় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে।
বিশেষ করে নদী ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো নিয়ে সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন উঠেছে। অনেকে বলছেন বাঁধ মজবুত হলেও ঢলের তোড়েই বেশিরভাগ সময় বাঁধ ভেঙে যায়। এবারও একই আশঙ্কা কৃষকদের।
0 Comments
Please login to start comments